1. editor1@japanbanglapress.com : editor1 :
  2. japanbanglapress@japanbanglapress.com : japanbanglapress :
  3. mdzahidulislam1000@gmail.com : zahid :
সাম্প্রতিক :
সংস্কারের নামে দেশে সার্কাস চলছে, বললেন জি এম কাদের ‘মব ভায়োলেন্স কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়’ পারস্পরিক শুল্ক, যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা অর্ডার স্থগিত শুরু করেছেন ইন্টারনেট গতিতে বিশ্ব রেকর্ড জাপানের ব্যয় বৃদ্ধিতে সাড়ে পাঁচ শ টেক্সটাইল কারখানা বন্ধ এনসিপি নেত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ যুগ্ম আহ্বায়কের ‘বাতিঘর’এর বর্ষপূর্তি, জুলাই সন্ত্রাসের ডালপালা ও নিউইয়র্ক কানেকশন ! ফকির ইলিয়াস বিভিন্ন দেশের ভিসা পেতে বাংলাদেশিদের ভোগান্তি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে চাই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেনদেনের দ্বন্দ্বে ভাঙারি ব্যবসায়ীকে হত্যা : ডিএমপি

বর্তমান সমাজে তরুণদের হতাশা ও সম্ভাবনা

  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫

লেখক: Asif Ahmed

আমি একজন তরুণ। হয়তো আপনার পাশের বাসায় থাকা সেই ছেলেটির মতোযার সারাদিন কাটে পড়াশোনা, দুশ্চিন্তা, স্বপ্ন, পরিশ্রম আর নীরব দীর্ঘশ্বাসে। আমার মতো হাজারো তরুণ প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠে একটি প্রশ্ন নিয়ে “আমার ভবিষ্যৎ কোথায়?” এই প্রশ্নের উত্তর কেউ দেয় না ।বিশ্ববিদ্যালয় দেয় না, সমাজ দেয় না, রাষ্ট্র দেয় না—এমনকি অনেক সময় পরিবারও না। আমরা এমন একটা সময় পার করছি যেখানে তরুণরা সবচেয়ে বড় জনসংখ্যা হিসেবে সমাজে উপস্থিত। কিন্তু তারা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনো মুখস্থ নির্ভর, চাকরি বাজার ভরসাহীন আর সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি যেন বোঝে না। একজন তরুণের মন কী চায়? আমরা যেন বন্দি। না চাইতেও সমাজ আমাদেরকে এক ছাঁচে ফেলে দিতে চায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট পেরোতেই পরিবার প্রশ্ন করে “কখন চাকরি পাবে?” চাকরি পেলে “বিয়ে কবে?” বিয়ে হলে “বাচ্চা কবে?” তারপর কেবল চলে যায় বাকি জীবন…. এভাবে একটা তরুণ নিজের স্বপ্নগুলোকে একে একে গলা টিপে মারে, শুধুমাত্র সমাজের একটু ‘স্বীকৃতি’ পাওয়ার জন্য। এই সব চাপের মধ্যে গড়ে ওঠে হতাশা। হ্যাঁ, আজকের তরুণরা হতাশ। হতাশ তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে, নিজের দক্ষতা নিয়ে, সমাজের চোখে নিজের অবস্থান নিয়ে। অনেকে এটাও ভাবে “আমি কিছুই পারবো না”, “জীবনটা বুঝি থেমে গেল।” আমিও অনেকবার ভেবেছি।

তবে আমি ভাগ্যবান কারণ আমি এখনো স্বপ্ন দেখি। আমরা এখনো স্বপ্ন আগলে রাখে বেঁচে আছি। স্বপ্ন আগলে রাখে একটা পৃথিবী আছে। যেখানে তরুণরা ভয় না পেয়ে নিজের ইচ্ছেমতো বাঁচতে পারবে। যেখানে একজন যুবক চায়ের দোকানে বসে স্বপ্ন নিয়ে কথা বলবে না যে “আত্মহত্যা” করবে কিনা তা নিয়ে। আমাদের সমাজে তরুণদের ব্যর্থতা খুব দ্রুত চোখে পড়ে। কিন্তু তাদের লড়াই কেউ দেখে না। একজন তরুণ যখন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ক্লাস করে, বাসে ৩ ঘণ্টা রাস্তায় কাটায়, বাড়ি ফিরে রাত জেগে IELTS পড়াশোনা করে অনেকেই আবার চেষ্টা করে প্রিয়জনদের সাথে একটু হাঁসি মুখে সময় কাটাতে। কিন্তু এই পরিশ্রমটা কেউ বোঝে না, বুঝতে চায়ও না। তাঁর চোখের নিচের কালি দেখে সমাজ ভাবে সে হয়তো অলস, মাদক আসক্ত। কেউ ভাবে না সে হয়তো নিজের জীবন বদলাতে চায়। না বুঝে পরিবার না বুঝতে চায় এই নামধারী সমাজ।

আমরা তরুণরা এখন যুদ্ধ করছি এক অদৃশ্য যুদ্ধে। একদিকে ডিজিটাল যুগ আমাদের সামনে অফুরন্ত সুযোগ এনে দিয়েছে, আবার অন্যদিকে এক ভয়াবহ মানসিক চাপ। Facebook-এ দেখি বন্ধুরা বিদেশে, কেউ স্কলারশিপ পেয়েছে, কেউ গাড়ি কিনেছে। আর আমি? আমার তো মোবাইলটাও কাজ করে না ভালোভাবে। মন খারাপ হয়। নিজেকে প্রশ্ন করি আমি কি ব্যর্থ? কিন্তু না! এই প্রশ্নই একদিন আমাকে জাগিয়ে তুলেছে। বলেছে—“তুমি ব্যর্থ না। তুমি শুধু যাত্রাপথে আছো। গন্তব্য এখনো বাকি।” আমি বুঝেছি, নিজেকে বুঝানোর চেষ্টা করি হতাশ হওয়া মানেই হেরে যাওয়া নয়। হতাশা আসবে, ঠিকই আসবে, কিন্তু তা অতিক্রম করতে হয় নিজের বিশ্বাস দিয়ে, নিজের স্বপ্ন দিয়ে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আল্লাহর উপর ভরসা রেখে।

আমি এখনো চেষ্টা করি। যদি ব্যর্থও হই, ভাবি—এই ব্যর্থতা হয়তো একটা শিক্ষা হয়তো এইটুকু না হলে সামনে কিছুই বুঝতাম না। আমার অনেক বন্ধুই এখনো লড়ছে কেউ ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করছে, কেউ কোড শেখে রাত জেগে, কেউ বিদেশ যাওয়ার জন্য হাল ছাড়ে না। তাদের দেখে আমি অনুপ্রাণিত হই। তবে আমাদের এই পথচলায় দরকার সমর্থন। পরিবারের, শিক্ষকের, সমাজের।

একজন তরুণ যখন মনের কথা বলতে চায়, তখন তাকে যেন কেউ বলে—“চেষ্টা করো, আমি পাশে আছি।” যখন সে ব্যর্থ হয়, তখন যেন কেউ বলে—“সবাই ব্যর্থ হয়, তুমি আবার চেষ্টা করো।” এই ছোট্ট কথাগুলো অনেক তরুণকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।

আমরা তরুণরা চাই না সমাজ বদলাক আমাদের জন্য আমরা চাই সমাজ আমাদের সঙ্গে চলুক। আমরা ব্যতিক্রম কিছু হতে চাই না, আমরা নিজের মতো বাঁচতে চাই। আমাদের মধ্যে আছে প্রতিভা, সাহস, ভালোবাসা—শুধু দরকার একটুখানি স্বীকৃতি। আজ যে তরুণ হতাশ, কাল সে-ই সমাজের নেতা হতে পারে। যে ছেলেটা আজ চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে, কাল সে-ই হয়তো একটা কোম্পানির মালিক হবে। যে মেয়েটা আজ কাঁদছে নিজের পছন্দের পড়া নিয়ে, কাল সে-ই হয়তো সমাজের গর্ব হবে।

তরুণ মানেই সম্ভাবনা। হ্যাঁ, আমরা ক্লান্ত, ভেঙে পড়ি, কাঁদি—তবুও আবার উঠে দাঁড়াই। কারণ আমাদের স্বপ্ন আছে। আর যতক্ষণ স্বপ্ন থাকে, ততক্ষণ হারা যায় না।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
Japan Bangla Press © 2025. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest