নিউজ ডেস্ক, জাপান: মুখোমুখি: ড. শেখ আলিমুজ্জামান
বৈশাখী মেলা পরিচালনা কমিটি জাপানের প্রধান সমন্বয়ক,
জাপান বাংলাদেশ সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান।
২০০০ সালে জাপানে প্রথম বৈশাখী মেলার আয়োজন, ২৩ বছরের দীর্ঘ পথচলার সাবলীল বর্ণনা করেছেন উনার স্মৃতিচারনে।
আগামী ২১ এপ্রিল রবিবার টোকিওর ইকিবুকোরো নিশিগুচি পার্কে অনুষ্ঠিত হবে ২৩ তম বৈশাখী মেলা ও কারি ফেস্টিভেল।
উল্লেখ্য করোনা মহামারীর জন্য ২০২০ ও ২০২১ সালে বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।
জাপান বাংলা প্রেস ডট কম থেকে আমরা তার মুখোমুখি হয়েছি।
প্রশ্ন – জাপান বাংলাদেশ সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে ?
উত্তর – জাপান বাংলাদেশ সোসাইটি (জেবিএস) টোকিও তে রেজিস্ট্রিকৃত একটি আন্তর্জাতিক এনপিও (এনজিও)। ১৯৯৮ সালে ভয়াবহ বন্যা কবলিত বাংলাদেশের জন্য টোকিওতে চ্যারিটি কনসার্ট আয়োজনের মাধ্যমে এ প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু। সেই থেকে জেবিএস দুই বন্ধু দেশ জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সুদৃঢ় সেতুর মত সংযোগ স্থাপন করেছে। জেবিএস এর কার্যক্রম মূলত স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিস্তৃত। দুই দেশেই এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম রয়েছে।
প্রশ্ন – টোকিওতে বৈশাখী মেলা শুরু হয় কখন থেকে ?
উত্তর – ২০০০ সালে টোকিওর প্রাণকেন্দ্র ইকুবুকুরু নিশিগুচি পার্কে টোকিও বৈশাখী মেলা শুরু করে জাপান বাংলাদেশ সোসাইটি (জেবিএস)।
প্রথম দিকে জেবিএস মেলার আয়োজন ও পরিচালনা এককভাবে করলেও আপামর প্রবাসীদের সাথে একাত্ম হয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করার লক্ষ্যে ২০০৪ সাল থেকে মেলার পরিচালনা প্রবাসী বাংলাদেশীদের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়। সেই থেকে জৈবিএস মেলার আয়োজক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করে আসছে। মেলার দিন জেবিএস মেলা প্রাঙ্গণে প্রবাসীদের বিনামূল্যের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে থাকে।
বৈশাখী মেলা বাংলাদেশী কমিউনিটি সবচেয়ে বড় ও নিয়মিত অনুষ্ঠান। টোকিও বৈশাখী মেলা যেমন প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রাণের মেলা তেমনি বাংলাদেশপ্রেমী জাপানিদের কাছেও এটি প্রানের মেলা। প্রবাসী বাংলাদেশীদের মতো বহু জাপানিও এই মেলাটির জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে।
উল্লেখ্য করোনা মহামারীর জন্য ২০২০ ও ২০২১ সালে বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয় নাই।
প্রশ্ন – জাপানে শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে ?
উত্তর – ২০০৫ সালে জাপানের সংস্কৃতি চর্চার প্রাণকেন্দ্র ইকিবুকুরু নিশিগুচি পার্কে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মাপের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে শহীদ মিনার তৈরি হয় । টোকিওর প্রাণকেন্দ্র ইকুবুকূরুতে অবস্থিত পার্কটি টুরিস্ট স্পট হিসেবে বিখ্যাত।
তোশিমা সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে শহীদ মিনার নির্মাণের প্রস্তাবক ছিলাম আমি, যা সমর্থন করেন ড. ওসামু উতসুবো, চেয়ারম্যান জাপান বাংলাদেশ সোসাইটি।
পরবর্তীতে আমার নেতৃত্বে টোকিও বৈশাখী মেলা কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবটি উত্থাপন করে ,যার সমর্থনে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ সরকার। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্মিত বহিরবিশ্বে এটাই প্রথম শহীদ মিনার। শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয় ২০০৫ সালের ১২ জুলাই ।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ।
২০০৬ সালের ১৬ জুলাই সপ্তম টোকিও বৈশাখী মেলায় শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন জাপানের তৎকালীন পরিবেশমন্ত্রী।
প্রশ্ন – জাপানের বাংলাদেশি কমিউনিটির এখন দ্বিতীয় না তৃতীয় প্রজন্ম। বাংলাদেশের চেয়ে নেপালের কমিউনিটি সংখ্যা এত বেশি হওয়ার কারণ কি ?
উত্তর – প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ কমিউনিটির এখন দ্বিতীয় প্রজন্ম।
নেপালের সাথে জাপান সরকারের দীপক্ষীয় চুক্তি ও কোটা রয়েছে। নেপাল সরকারের দূরদর্শিতার কারণেই জাপানের নেপালের কমিউনিটি এখন ২ লক্ষেরও বেশি।
বাংলাদেশে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় স্থাপিত হয়েছে ২০০০ সালে। মন্ত্রণালয়ের জরিপ অনুযায়ী প্রবাসী বাংলাদেশীদের ৭৮ % অদক্ষ হিসেবে বিদেশে যায়। পক্ষান্তরে নেপালিরা দক্ষ এবং ভাষা শিখে প্রবাসে আসে। যার কারণে বাংলাদেশের সংখ্যা এখন ২০ হাজারের মতো।
প্রশ্ন – এবারের বৈশাখী মেলার বাজেট কত ?
উত্তর – এবারের বৈশাখী মেলার বাজেট ৫০০ মাং। মেলা শেষে উন্মুক্ত সভার মাধ্যমে মেলার হিসাব প্রকাশ করা হয়।।
Leave a Reply