নিউজ ডেস্ক, ঢাকা: নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা এলাকায় মাশরাফির দোতলা ভবনের বাড়িটিতে ভেতরে অবশিষ্ট আর তেমন কিছুই নেই। দিনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর রাতভর চলেছে লুটপাট। তার পশ্চিম পাশে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোসের বাড়ির অবস্থাও একই। বাইরে গ্যারেজে পড়ে আছে শুধু একটি প্রাইভেট কারের পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নড়াইল জেলা শহর ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে দেশত্যাগের খবরে গত সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৪টার পর থেকে নড়াইল শহরে বিজয়োল্লাসে নামে সাধারণ মানুষ। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং নড়াইল–২ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুবাস চন্দ্র বোস এবং সাধারণ সম্পাদক নিজামুদ্দিন খানের বাড়ি, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, জেলা পরিষদের কার্যালয়সহ একাধিক বাড়ি ও স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
সেখানে কথা হয় মাশরাফির প্রতিবেশী এক নারীর সঙ্গে। তিনি গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত সব দেখেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নারী ঢাকা মেইলকে বলেন, সারা রাত দুটি বাড়ি থেকে মালামাল লুটপাট হয়েছে। তিন-চারবার আগুন ধরিয়েছে। নিষেধ করেছিলাম, শোনেনি। উল্টো ধমক দিয়েছে। এগুলো ঠিক করেনি।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের কুড়িগ্রামে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজামুদ্দিন খানের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, সেখানে গতকাল বিকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে দুটি গাড়িসহ বিভিন্ন মাল পুড়ে যায়। বাড়ির ভেতরের অনেক জিনিসপত্র লুটপাট হয়েছে। আজ সকালে আরেক দফায় ওই বাড়িতে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
এর আগে শহরের পুরাতন বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সব জিনিসপত্র লুটপাট হয়েছে। বাকি যা ছিল, তা আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে। সেই আগুন এখনো নিভু নিভু করে জ্বলছে। আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের উত্তর পাশে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও পূর্ব পাশে থাকা বঙ্গবন্ধু মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়েছে।
এছাড়া চৌরাস্তা এলাকায় জেলা পরিষদ কার্যালয় ও মুচিপোল এলাকায় এনআরবিসি ও সোনালি ব্যাংকে ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, কোনো ধরনের সহিংসতায় কাউকে না জড়ানোর জন্য আহ্বান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছেন তারা।
Leave a Reply