নিউজ ডেস্ক, ঢাকা: অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে এবং তাদের অভিযোগ শুনতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে যাচ্ছেন। তিনি ১১ দফা দাবিতে আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাদের দাবিগুলো বিবেচনা করবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যাওয়ার কথা রয়েছে।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকাল ৪টার পর তিনি সেখানে যাবেন বলে জানা গেছে। সেখানে পুলিশ অডিটরিয়ামে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেবেন তিনি।
জানা গেছে, ১১ দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন অধস্তন পুলিশ সদস্যরা। দাবি মানা না হলে দায়িত্বে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন। তার মধ্যে দুই দফার বাস্তবায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। বাকিগুলোর বাস্তবায়ন চান তারা।
পুলিশের দাবির মধ্যে রয়েছে- রাজনৈতিকভাবে যাতে পুলিশকে ব্যবহার করা না যায়, এ কারণে কমিশন গঠন; বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যে পুলিশ সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে তাদের বিচার করতে হবে; পুলিশ কোনো সরকার বা রাজনৈতিক দলের অধীনে কাজ করবে না, পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশের জনগণের সেবা তথা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত থাকবে; সারা দিনে ৮ ঘণ্টার বেশি ডিউটি করানো যাবে না; অধস্তন কর্মচারীরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কোনো অবৈধ বা মৌখিক আদেশ পালন করতে পারবেন না; অধস্তন কর্মচারীদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদোন্নতির মতো পন্থা অবলম্বন করতে হবে; বার্ষিক নৈমিত্তিক ছুটি ২০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিন করতে হবে।
এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতো অধস্তন কর্মচারীদের সোর্স মানি দিতে হবে, বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি ইউনিটে ১০ তারিখের মধ্যে টিএ এবং ডিএ বিল পরিশোধ করতে হবে, নতুন বেতন স্কেল প্রণয়ন করতে হবে, ঝুঁকিভাতা বাড়াতে হবে, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে শুরু করে বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেকটি পুলিশ লাইনস, থানা, ফাঁড়ি, গার্ড, ক্যাম্পের নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করে নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে হবে।
অপরদিকে, তিনদিন বন্ধ থাকার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ২৯ থানায় সেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যদের পাহারায় শুক্রবার (৯ আগস্ট) পুলিশ সদস্যরা তাদের কর্মস্থলে যোগ দেন।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত সোমবার বিকালে থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় থানা-পুলিশের কাজে ব্যবহৃত অনেক গাড়ি। বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্রসহ সরঞ্জাম ও নথি লুট হয়। এরপর পুলিশি ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ে।
Leave a Reply