নিউজ ডেস্ক, জাপান: জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে শক্তিশালী টাইফুন ‘শানশান’। এ জন্য জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে কিউশু ও হনশু দ্বীপের কর্তৃপক্ষ লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বাতিল করা হয়েছে বহু অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। সেই সঙ্গে বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা তাদের ১৪টি কারখানার কার্যক্রম স্থগিত করেছে।
জাপানের সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর ২টার দিকে টাইফুন ‘শানশান’ ইয়াকুশিমা দ্বীপ থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় কিউশু দ্বীপের কাগোশিমা ও মিয়াজাকি অঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল।
দেশটির মন্ত্রীপরিষদের চিফ সেক্রেটারি ইয়োশিমাসা হায়াশি সাংবাদিকদের বলেছেন, টাইফুন ‘শানশান’ বৃহস্পতিবার অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে দক্ষিণ কিউশুর দিকে অগ্রসর হবে। ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যা অতীতের তুলনায় ‘হিংস্র বাতাস’ ও ‘উঁচু ঢেউ’ বয়ে আনবে।
স্থানীয় সমবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, টাইফুনটি কয়েকদিনের মধ্যে রাজধানী টোকিওসহ মধ্য ও পূর্বাঞ্চলের দিকে কিউশুতে আঘাত হানবে। কর্তৃপক্ষ বুধবার কিউশুর কাগোশিমা প্রদেশ এবং মধ্য হনশু দ্বীপের আইচি ও শিজুওকা অঞ্চলের আট লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ জারি করেছে।
জাপান এয়ারলাইন্স বুধবার ও বৃহস্পতিবারের জন্য নির্ধারিত ১৭২টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট এবং ছয়টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করেছে। অল নিপ্পন এয়ারওয়েজের (এএনএ) ২১৯টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট এবং বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের জন্য নির্ধারিত চারটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করেছে। এসব ফ্লাইটে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করার কথা ছিল।
কিউশু দ্বীপের রেলওয়ে জানিয়েছে, তারা বুধবার রাত থেকে কুমামোতো ও কাগোশিমা চুওর মধ্যে শিনকানসেন বুলেট ট্রেন পরিষেবা স্থগিত করবে। এছাড়া সেখানে ডাক ও সরবরাহ পরিষেবাও স্থগিত করা হয়েছে। সুপারমার্কেট ও অন্যান্য দোকানপাটও দ্রুত বন্ধর পরিকল্পনা রয়েছে।
অন্যান্য অপারেটররা জানিয়েছে, টোকিও এবং কিউশুর সবচেয়ে জনবহুল শহর ফুকুওকার ট্রেনগুলোও চলতি সপ্তাহে আবহাওয়ার অবস্থার ওপর নির্ভর করে বাতিল হতে পারে।
গত মাসে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জাপান অঞ্চল টাইফুনের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এই ঝুঁকি আরও দ্রুত তীব্রতর হচ্ছে এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
দেশিটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ইয়োশিফুমি মাতসুমুরা বাসিন্দাদের জীবন বাঁচাতে নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্র ক্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার মতো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
Leave a Reply