1. editor1@japanbanglapress.com : editor1 :
  2. japanbanglapress@japanbanglapress.com : japanbanglapress :
  3. mdzahidulislam1000@gmail.com : zahid :
সাম্প্রতিক :
২৩-২৫ জানুয়ারি ঢাকায় বসছে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন সাশ্রয়ী মূল্যে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্তে সরকার সংবিধান সংস্কার  অপচেষ্টার বিরুদ্ধে  যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসী বিশিষ্টজনের নিন্দা ও প্রতিবাদ  শেষমুহূর্তে বাইডেনের ঘোষণা করা ক্ষমা বাতিল করবেন ট্রাম্প শপথ পরবর্তী ভাষণে যা বললেন ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথগ্রহণ কোটা : মেডিক্যালে ৪১ পেয়েই চান্স, ৭০ পেয়েও কাঁদছেন অনেকেই এআই দিয়ে তৈরি নকল ছবি শনাক্ত করবে গুগল সোমবার রাতে সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা আ. লীগকে নিষিদ্ধের পরিকল্পনা নেই সরকারের: প্রেস সচিব

জামাত কি ক্ষমতায় আসছে?:মুজিব রহমান

  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

অনেকেই নিজের হাতে বিচারের দায়িত্ব তুলে নিচ্ছেন। খোলা ট্রাকে বহু লোক নিয়ে উড়াল সড়কে বা এক্সপ্রেস ওয়েতে উঠা বিপদজনক। জড়তার কারণে গাড়ি হঠাৎ টান দিলে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। এটা বোকা লোকদের জানার কথা নয়। যৌক্তিকভাবেই টোল প্লাজার কর্মীরা একটি পীক-আপ আটকে দেয়। পিকআপ ভর্তি মত্ত জনতা তা না মেনে টোলপ্লাজার প্রতিবন্ধক-দণ্ড ভেঙ্গে লোকজনকেও মারধর করে বীরের বেশে চলে যায়। তারা জামাতের কর্মী কি না তা নিশ্চিত নই কিন্তু মানুষ এদের আচরণ দিয়ে জামাতকে বিবেচনা করবে। কারণ ওরা হঠাৎ করেই সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াতে চাচ্ছে, সর্বত্রই আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে। স্থানীয় সরকার বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ, একজন সাবেক প্রো-ভিসিসহ বিভিন্ন জনের সাথে আলোচনা হল। এর আগে একজন শিবির সমর্থক জানিয়েছিলেন, ‘ছাত্ররা দল গঠন করবে এবং জামাতের সাথে তারা ঐক্য করে নির্বাচনে গিয়ে বিজয়ী হবে। আমরা বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে রাখবো দৌড়ের উপর। ওরা সম্মিলিতভাবেই আমাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে ব্যর্থ হবে।’ খুবই হাস্যকর যুক্তি ও আশা। ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কগণ কখনোই রাজনৈতিক দল গঠনের কথা বলেননি। এখন যে, মব জাস্টিস হচ্ছে এবং একটা ভীতি তৈরি হয়েছে তার দায়ও নিতে হবে এই দাপিয়ে বেড়ানোদের।

ছাত্রদের আন্দোলন সফল হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। দীর্ঘদিন ভোট দিতে না পারা, হঠাৎই অর্থনৈতিক ধাক্কা, রিজার্ভ কমে যাওয়ার আতঙ্ক, দ্রব্যমূল্যে সীমাহীন মূল্যবৃদ্ধি, বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার না থাকা, বিরোধী দলের উপর নিপীড়ন, বিপুল টাকা পাচার ও দুর্নীতি ইত্যাদিতে জনগণ অতীষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। ফলে ছাত্রদের পাশে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক-জনতাও জড়িয়ে পড়েছিল। সাধারণ মানুষ, চিকিৎসক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী, শিল্পী, লেখক ইত্যাদি মানুষের সমাবেশ ঘটেছিল বলেই বিজয় এসেছিল। ছাত্রদের বিজয়কে মানুষ সম্মান জানিয়েছে। কিন্তু মানুষ যখন অনুমান করছে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে ক্ষমতার লোভে মশগুল হয়ে দল গড়তে চাচ্ছে তখন তারা সমর্থন দেয়নি। এটা ছাত্রদের কাজ নয়। ছাত্ররা শিঘ্রই বুঝতে পারবেন যে, দেশে তাদের দল গড়তে কেউ এগিয়ে আসবে না।

বাস্তবিক এখনো মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতেই বিভক্ত। তারা কিছু বিষয়ে আতঙ্কিত হচ্ছে। বিশেষ করে যখন দেখছে হঠাৎই ধর্মভিত্তিক একটি দল ভেবে বসেছে তারাই ক্ষমতায় যাবে। সে ভাবনাটার প্রকাশ ঘটাতে বিভিন্ন আগ্রাসন চালাচ্ছে। তারা দল বেধে দাবী দাওয়া জানাচ্ছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের অনুগামীদের ভিসি বানাতে চাপ দিচ্ছে। ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে—তা করতেই পারে তাতে আগ্রাসী মনোভাব না থাকলে মানুষ অংশগ্রহণও করবে ও করছে। কিন্তু কোথাও কোথাও ওই আগ্রাসী ভাবটা একটা আতঙ্কও তৈরি করছে। আমাদের আশঙ্কা ছিলই। কারণ স্বৈরশাসনের সমর্থক লেখক-বুদ্ধিজীবীরা মারাত্মকভাবে একটা আতঙ্ক তৈরি করেছিল যে, উগ্রজঙ্গীগোষ্ঠী ক্ষমতা দখলে নিয়ে ফেলেছে। সেটা জঙ্গি-মৌলবাদীদের আশাবাদী করে তুলেছিল। সেই ভরসায় তারা উঠে পড়ে লাগছে এবং আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে ধাক্কা মেরে একাই ক্ষমতায় যাওয়ার আশা করছে।

তারাতো এই আন্দোলনের রূপকারও নন এমনকি সহায়ক শক্তিও নন। এই আন্দোলনে তারা যুক্ত হয়েছে বিএনপি, সিপিবির সাথেই। স্পষ্টভাবে বললে ১৮ জুলাই। তাহলে তারা কিভাবে ক্ষমতায় যাবে? তারাতো এর আগে পাকিস্তানামলে ২৪ বছরের অধিকাংশ সময় ক্ষমতায় থেকেছিল। ৭০ এর নির্বাচনেই দেখা গেল তারা সংখ্যায় বাড়েনি। মুসলিম লীগ নাই হয়ে গিয়েছে। এরপর ২০০১-২০০৬ পর্যন্তও ক্ষমতার ভাগিদার ছিলেন। তাতেও কি তাদের জনসমর্থন বেড়েছিল? সেটাতো দেখিনি। তাদের যখন নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করলো নির্বাচন কমিশন তখনও তারা প্রতিরোধের পথেই যেতে পারেননি। তাদের সমর্থন বেড়েছে এমন কোন নমুনাও দেখা যায়নি। রাস্তাঘাটে, হাটে-বাজারে, আড্ডায়, কলামে-জরিপে কোথাও তাদের সমর্থন বাড়ার কোন সংবাদও নেই। কেবল পরাজিত নাৎসিরা একটা আতঙ্ক তৈরি করতে বলছে, বাঘ আসছে? বাস্তবিক এমন কিছু হয়নি। এমনকি বর্তমান সরকার কিংবা সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশবাহিনীও তাদের ভাবাদর্শে ভরপুর নয়। তাহলে হঠাৎই তারা এককভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কেন?

প্রথম দফায় ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ৬৫ জনের মধ্যে একজনও তাদের দলের লোক ছিলেন না। দ্বিতীয় দফায় সমন্বয়ক বাড়িয়ে করা হয় ১৫৮ জন (জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা খুনে জড়িত থাকায় একজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে)। সেখানেও তাদের কেউ ছিলেন না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেও তাদের কেউ নেই। এখন পর্যন্ত সরাসরি তাদের প্রকৃত কোন ভিসিও নিয়োগ দেয়া হয়নি। পরাজিত শক্তির দ্বারা তৈরি একটি বুদবুদ ছাড়া আর কিছু দেখছিও না। তাতেই তারা যে আতঙ্কটা তৈরি করে একটা ভীতি তৈরি করতে চাচ্ছে তা কি তাদের জন্য সহায়ক হবে? যাকে মানুষ ভয় পাবে এবং নিজের বলে মনে করবে না, তাকে কি গ্রহণ করবে? আজ ভোট হলে জামায়াতে ইসলামী কতটি আসন পাবে? ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জামায়ত ই ইসলামী কোন আসন না পেলেও ৬% ভোট পেয়েছিল। এর আগে ১৯৬২ সালে তারা চারটি আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন। এরপরে ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে তারা ৬টি আসনে বিজয়ী হন। ১৯৮৬ সালে বিজয়ী হন ১০ জন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে তারা ১২% ভোট পেয়ে ১৮টি আসনে জয়লাভ করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তারা ৮.৬১% ভোট পান এবং আসনও কমে হয় ৩টি। ২০০১ সালের নির্বাচনে তাদের ভোট আরো কমে হয় ৪.২৮% এবং জোটবদ্ধ নির্বাচন করায় আসন বেড়ে হয় ১৭টি। ২০০৮ সালে জোটবদ্ধ নির্বাচন করে ভোট পায় ৪.৭% কিন্তু আসন পায় মাত্র ২টি। ২০০১ সালের চেয়ে ২০০৮ সালে জোটগতভাবে বেশি আসনে নির্বাচন করার সুযোগ পায় বলে তাদের ভোট বাড়ে। বাস্তবিক ১৯৯১ সালের পর থেকে তাদের ভোট ধারাবাহিকভাবেই কমেছে এবং তা ৭০ সালের চেয়েও নিচে নেমে এসেছে। ২০০৯ সালের পরে বিভিন্ন জরিপে জামাতের ভোট ৩% এর কমবেশি বলে দেখা গিয়েছে।

আধিপত্য বিস্তারে রগ কাটা ও গলা কাটার অভিযোগ ছিল জামাতের ছাত্র সংগঠন শিবিরের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনটা বহুবারই ঘটেছে। এরসাথে একাত্তরে স্বাধীনতা বিরোধীতাটা সবসময়ই উচ্চারিত হতো। ফলে মানুষের মধ্যে একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। ২০০৯ সালের পরে এবং ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করলে তারা আরো চাপে পড়ে যায়। এর পরে দেশে জ্বালাও পোড়াওর যে অভিযোগ উঠে তার দায় অনেকে ঠেলে দেন জামাতের দিকে। এরচেয়ে সংকট তৈরি হয় শীর্ষ নেতাদের যুদ্ধাপরাধের মামলায় ফাঁসী অথবা দীর্ঘমেয়াদী জেল দেয়ায়। ফলে নেতৃত্বের মারাত্মক ঘাটতিও তৈরি হয় যা এখনো বহমান। আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের সময় জামাত কঠিন চাপে থাকায় অন্য ইসলামী দলগুলো সংগঠিত হয়। বিশেষ করে এ সময়ে চরমোনাই পীরের ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন সংগঠিত হয়। তাতে জামাতের ভোটও ভাগ হয়ে যায়।

এটা নিশ্চিত করেই বলা যায় যে, শিক্ষার্থীরা শিঘ্রই কোন বড় রাজনৈতিক দল গঠন করতে পারছে না। ড. ইউনূসের বয়স হয়েছে ৮৪+ বছর। তার পক্ষে নতুন করে দল গঠনও অসম্ভব। একবার ‘নাগরিক শক্তি’ নামে দল করে পরে তওবা করে রাজনীতি ছেড়েছেন এবং বুঝেছেন এ ক্ষেত্রটি তার নয়। ফলে ইউনূস বা ছাত্র আন্দোলনের কোন রাজনৈতিক শক্তির কিংস পার্টি হয়ে জামাতের ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ দেখছি না। এখন দেশে রাজনীতির যে অবস্থা চলছে তাতে অচিরেই নির্বাচন হলে বিএনপি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে, চাইবে সব দলই আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। তাতে জামাত যদি আলাদাভাবে ও এককভাবে নির্বাচন করে তবে তাদের আসন সংখ্যা অতীতকে অতিক্রম করতে পারবে না। ফলে তাদের ক্ষমতায় যাওয়া অসম্ভব হবে এমন কি প্রধান বিরোধী দলে পরিণত হওয়াও কঠিন। জাতীয় পার্টি এখন মারাত্মকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে। কাদের সাহেব ক্ষমা চেয়েই জনগণের কাছ থেকে পার পাবেন বলে মনে হয় না। সমাজেতো আওয়ামী লীগ শক্তিশালীভাবেই রয়েছে। যদি কোন কারণে দলটি নির্বাচনে দলীয় প্রতিক নিয়ে অংশগ্রহণ নাও করতে পারে তবুও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও কমপক্ষে ৩০ থেকে ৫০ জন বিজয়ী হয়ে আসবে। ফলে তাদেরই বিরোধী দলে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। তবে রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
Japan Bangla Press © 2025. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest