1. editor1@japanbanglapress.com : editor1 :
  2. japanbanglapress@japanbanglapress.com : japanbanglapress :
  3. mdzahidulislam1000@gmail.com : zahid :
সাম্প্রতিক :
ইতিহাসের সেরা নির্বাচনের পরিকল্পনা করছি: প্রধান উপদেষ্টা মানিকগঞ্জে সমন্বয়কদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ক্লিনিক থেকেই দেশবাসীর কথা জানতে চাইলেন খালেদা জিয়া ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইওয়াইয়া ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ যুক্ত নয় মার্কিন সরকার : দূতাবাস টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে হাতুড়ি দিয়ে হামলা ‘বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণায়’ অসহায়ত্ব, প্রবাসীদের সহায়তা চাইলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রথমবারের মতো দেশে ব্যাট রিওভাইরাস শনাক্ত, ছড়ায় যেভাবে মায়ের জন্য বাসায় তৈরি খাবার নিয়ে ক্লিনিকে তারেক রহমান আ.লীগের নিবন্ধন থাকবে কিনা ‘সময় বলে দেবে’: সিইসি

তোমরা শিক্ষিত হয়েছো, কিন্তু মানুষ হও নাই : তোফাজ্জলের জানাযায় ইমামের বক্তব্য ভাইরাল

  • আপডেটের সময় : শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নিউজ ডেস্ক, ঢাকা: ঢাবিতে বর্বরোচিত গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জলের জানাযা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মা-বাবা আর ভাইয়ের কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শা‌য়িত হলেন তিনি।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় স্থানীয় মাদ্রাসা মাঠে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শোকে কাতর এলাকাবাসী এই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

তোফাজ্জলের জানাযার নামাজের পূর্বে এক বক্তব্যে স্থানীয় ইমাম বলেন, ‘তোমরা শিক্ষিত হয়েছো কিন্তু মানুষ হও নাই।’

এ বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ইমাম বলেন, ‘ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, বাবা মারা গেল, মা-ও মারা গেল। আমার কাছে বড় আশ্চর্য লাগছে তার মা আর বাবার জানাযা আমিই পড়িয়েছিলাম। কিন্তু তোফাজ্জলের জানাযা আমাকেই পড়াতে হবে সে কথা বুজি নাই। ভেবেছিলাম তোফাজ্জল আমার জানাযায় শরিক হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি মানুষ গড়ার কারিগর। আমার বড় ভাইও ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়েছিল। অনেক গিয়েছি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে। আমি যে গিয়েছিলাম এটার জন্য নিজের কাছে অনেক দুর্বিষহ লাগতেছে। একটা ছেলেকে ঠিক কীভাবে নির্যাতন করলে পায়ের গোশত খসে পড়তে পারে, কীভাবে রক্তাক্ত হতে পারে। আমার মনে হয় তোমরা শিক্ষিত হয়েছো কিন্তু মানুষ হও নাই।’

‘আমার মনে আছে একসময় ওর বাবা একসময় দূরে চলে গিয়েছিল। ওরা সবসময় দুর্বিষহ জীবনযাপন করতো। আমাদের বাড়িতে বারবার যেত। তোফাজ্জলের জীবনে মনে হয় আর শান্তি হলো না,’ যোগ করেন তিনি।

স্থানীয়রা বলেন, তোফাজ্জল খুবই হাস্যরসিক লোক ছিলেন। তাকে আমরা কখনই কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে দেখিনি। মানসিক ভারসাম্যহীন হলেও সবার সঙ্গেই হাসিমুখে কথা বলতেন তিনি। আমরা এই মৃত্যুকে কোনোভাবেই মানতে পারছি না। আমাদের দেশের সর্বোচ্চ একটা বিদ্যাপীঠে এমন নৃশংস একটা ঘটনা ঘটবে ভাবতেও পারিনা। ও যদিও চুরি করেনি, তবু যদি করেও থাকত এ জন্য আইন রয়েছে। সামান্য কয়েক টাকার মোবাইলের জন্য একটা জীবনকে এভাবে চলে যেতে হবে তা মানা যায় না।

এলাকাবাসী আরো জানান, নিহত তোফাজ্জল প্রেম সংক্রান্ত ব্যাপারে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিল। এ অবস্থায় কিছুদিনের মধ্যেই তোফাজ্জলের মা, বাবা ও একমাত্র বড় ভাই পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর মারা যান। যার কারণে পরিবার ও অভিভাবকহীন হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতো তোফাজ্জল। তোফাজ্জল বেশ স্বজ্জন, পরোপকারী ও নেতৃত্বগুন সম্পন্ন ছিলেন।

তারা জানান, বিগত ২ থেকে ৩ বছর তোফাজ্জল প্রায়ই ঢাকা বিশবিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াত। এলাকার যারা ওরে চিনতো সবাই সহযোগিতা করতো। ক্যাম্পাসে পরিচিত কাউকে দেখলেই দৌড়ে এসে কুশল বিনিময় করতো। পরিচিতজনরা ওকে দেখলে খাবার কিনে দিত বা খাওয়ার জন্য টাকা দিত। তোফাজ্জল মাঝে মধ্যে টাকা চেয়েও নিত। খাবার ও খাবার টাকার বাইরে ওর তেমন কোন চাহিদা ছিলো না।

তোফাজ্জলের ভাবি লতিফা বেগম বলেন, প্রথমে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টা ২ মিনিটের ০১৩১০৭৯০৩৭২ নম্বর থেকে আমাকে ফোন দিয়ে তোফাজ্জেলের দ্বারা কথা বলায়, তোফাজ্জেল বলে আমাকে বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্ররা ধরেছে মারধর করছে, টাকা চায় এতটুকু কথা বলায়। এরপর ০১৭৪৩৭৪৫৪২৬ নম্বর থেকে ১০ টা ২৮ মিনিটে ফোন দিয়ে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায়।

লতিফা বেগম বলেন, কাল রাতে টাকা চেয়েছিল দিতে পারিনি দেবরকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। আমার স্বামী মারা গেছে, বাবা থেকেও নেই, পুরুষ বলতে আমাদের কেউ নেই। বর্তমানে আমার দুই সন্তান এবং মাকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এদিকে তোফাজ্জেলের মামা আব্দুর রব জানান, বুধবার রাতে তার কাছেও ৩৫ হাজার টাকা চেয়েছে। টাকা না দিলে তোফাজ্জেলকে মেরে ফেলবে। এ খবর শুনে আমার মেয়ে তানিয়া ঢাকায় থাকায় ওর সাথে বিষয়টি আলাপ করেছি। পরে বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেলাম তোফাজ্জেলকে হত্যা করা হয়েছে। আমার মেয়ে খবর শুনেই ঢাকা মেডিকেলে যায়।

তোফাজ্জলের স্কুলশিক্ষক মিলন মিয়া জানান, স্কুল জীবন থেকেই তোফাজ্জল খুব মেধাবী এবং শান্ত স্বভাবের ছিল। ও সবসময় শিক্ষক এবং বড়দের সম্মান করত। আমরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

এ বিষয়ে তোফাজ্জলের মামাতো বোন তানিয়া জানান, আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে দোষ এড়ানোর জন্য মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করলে মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হলে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছিল। এমন সময় হঠাৎ তোফাজ্জল নামে যুবক হলে প্রবেশ করলে শিক্ষার্থীরা দুপুরে ছয়টি মোবাইল চুরির ঘটনার চোর সন্দেহে মূল ভবনের অতিথি কক্ষে নিয়ে তাকে মারধর ও জেরা করতে থাকে। একপর্যায়ে, তাকে নিয়ে হল ক্যানটিনে খাওয়ানো হয়। এরপর এক্সটেনশন ভবনের অতিথি কক্ষে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় বুক, পিঠ, হাত ও পায়ে ব্যাপক মারধর করেন একদল শিক্ষার্থী। মারধরের ফলে ওই যুককের পা থেকে রক্ত বের হতে থাকে। এরপর রাত পৌনে ১০টার দিকে ফের মূল ভবনের অতিথি কক্ষে নিয়ে মারধর করা হয়। এরপর ১০টার দিকে প্রক্টোরিয়াল মোবাইল টিমের সদস্যরা এলে মারধরকারীরা তাকে তাদের হাতে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে কিছু শিক্ষার্থী ও কয়েকজন হাউস টিউটরের সহায়তায় তাকে প্রথমে শাহবাগ থানায় এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
Japan Bangla Press © 2025. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest