নিউজ ডেস্ক, ঢাকা: লেখক প্রকাশক পাঠকবান্ধব পরিচ্ছন্ন বইমেলা, প্যাভিলিয়ন পদ্ধতি বাতিল ও স্টল ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়েছেন সৃজনশীল প্রকাশকগণ। তারা দালাল দুর্নীতিবাজ সরকারের মদদপুষ্ঠ প্রকাশকদের শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং গত ১৫ বছর বই কেনার নামে লুটপাটকারী ১৫জন প্রকাশকের বিচার দাবি করেছেন।
শনিবার সকালে বাংলাবাজারে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাফুস) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় ২১জন প্রকাশক তাদের মতামত প্রকাশ করেন।
২০২৫ এর বইমেলায় প্যাভিলিয়ন স্টল বাতিলের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলা একাডেমি বইমেলার নামে মূলত লুটপাট বাণিজ্য করেছে। স্টল ভাড়া বাড়াতে বাড়াতে ৭ হাজার টাকার ১ ইউনিটের স্টল এখন ১৭ হাজার টাকা ভাড়া নিচ্ছে। বাংলা একাডেমির কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক শ্রেণির অতি মুনাফা লোভী প্রকাশক প্যাভিলিয়ন স্টল চালু করে নিজেরা লুটপাট করছে। তাদের পছন্দ মত স্থানে তারা প্যাভিলিয়ন বানিয়ে মেলার সৌন্দর্য নষ্ট করছে। এতে করে সাধারণ প্রকাশকদের বই বিক্রি দিনে দিনে কমতে শুরু করেছে। শেষ হয়ে যাচ্ছে প্রকাশনা শিল্প। বাংলা একাডেমির এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা যোগসাজস করে অমর একুশ বই মেলাকে বারোয়ারী বাজারে পরিণত করেছেন।
স্পন্সর প্রতিষ্ঠান থেকেও তারা বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বইমেলার স্টল ভাড়া ৭৫ ভাগ কমানোর দাবি জানিয়েছেন প্রকাশকরা। তারা বলেন, পাঠক-প্রকাশক ও লেখকদের জন্য এই মেলা হলেও এর নেতৃত্ব-কর্তৃত্বে রয়েছে সরকারের তোষামোদকারী দল ও দালাল কয়েকজন প্রকাশক এবং আমলা।
সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে বই ক্রয়ের অনিয়ম ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত প্রকাশক ও কর্মকর্তাদের বিচারের দাবি জানান তারা। বিশেষ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের, এসইডিপি প্রকল্প, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও ধর্মমন্ত্রণালয় সহ ১৩টি মন্ত্রণালয়ে বই ক্রয় ও ১৬ বছরের লুটপাটকারী প্রকাশকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান প্রকাশকরা। এসব প্রকল্প ছাড়াও সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নামে বই ক্রয়ে যে সকল প্রকাশক ও সরকারি আমলা অনিয়ম করেছেন তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করার দাবী জানানো হয়। বিভাগীয় পর্যায়ে বইমেলার নামে গ্রন্থ কেন্দ্রের টাকা নয়ছয় করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে বর্ষাকালের পরিবর্তে শীতকালে মেলা করার দাবি জানান তারা। সেই বিগত সরকারের দালাল প্রকাশকদেরকে বইমেলার কোনো কমিটিতে না রাখার দাবি জানান। তারা আমলাদের ফরমায়েশি বই প্রকাশ না করারও দাবি জানান।
আদর্শ প্রকাশনীর মালিক মাহাবুব রাহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন- সাঈদ বারী (সূচিপত্র), দেলোয়ার হাসান (আবিষ্কার), মিজানুর রহমান সরদার (শিকড়), জহির দীপ্তি (ইতি), জামাল উদ্দিন (রয়েল পাবলিশার্স), শিহাব বাহাদুর (মুক্তচিন্তা), হেলাল উদ্দিন (হাসি প্রকাশনী), গিয়াসউদ্দিন (ঝিঙ্গে ফুল), মশিউর রহমান (সৃজনী), আহমদ মাসুদ (উত্তরণ), শিহাব উদ্দীন (বার্ড পাবলিকেশন), শরিফুল হক শাহাজি (শাহাজি প্রকাশনী), মহিউদ্দিন কলি (কলি প্রকাশনী), খন্দকার সোহেল (ভাষা চিত্র), জাবেদ ইমন (মুক্ত দেশ), আবু বক্কর সিদ্দিক রাজু (অ প্রকাশনী), মনিরুজ্জামান (মহাকাল প্রকাশনী), মোরসালিন (প্রতিভা প্রকাশ), মোরশেদ আলম (বাবুই প্রকাশনী), ফিরোজ মিয়া (নলেজ মিডিয়া), জাহাঙ্গীর আলম (তৃণলতা), জাকির হোসেন ভূঁইয়া (মাইক্রোটেক), ফিরোজ খান প্রিন্স (সোনামণি প্রকাশনী) ও তুষাড় (কেন্দ্রবিন্দু) প্রমুখ।
Leave a Reply