নিউজ ডেস্ক, ঢাকা: জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদান শেষে নতুন সরকারের পাশে থাকার ‘বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি’ নিয়ে দেশে ফিরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
চার দিনের সফরে শেষে শনিবার রাত ৩টা ৩২ মিনিটে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীরা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে ২৩ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে যান মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রেস সচিব শফিকুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যক ফ্লাইট স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকার উদ্দেশে নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ছেড়ে আসে।
এর আগে মুহাম্মদ ইউনূস নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ অধিবেশনে শুক্রবার ভাষণ দেন। বাংলায় দেওয়া তার এই ভাষণ বিশ্বনেতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
চার দিনের সফরকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তার দেশের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ যে কোনো বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিউ লুলা দা সিলভা, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বৈঠক করেন।
এ সফরে সব মিলে ১২টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
অন্যান্য বিশ্বনেতাদের মধ্যে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুলফ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জন ব্লিঙ্কেন, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরজুলা ফন দেয়ার লায়েনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা, মিয়ারমার বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ দূত জুলি বিশপ, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি, মানবাধিকার সিএসও‘স কো-অডিনেটর ক্যারি ক্যানেডিসহ আরও কিছু আন্তর্জাতিক ও বৈশ্বিক সংস্থার প্রধানদের বৈঠ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজ’ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের এই সফরকে ‘বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধানের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের সবচেয়ে সফলতম সফর’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল।
সফরের প্রতিটি দিনই প্রধান উপদেষ্টার কর্মব্যস্ত সময় পার করা তথ্য দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎসহ সাইডলাইনে ৪০টি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা।
শুক্রবার সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে ইউনূস বলেন, “আমাদের মুক্তি ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে আমি বিশ্ব সম্প্রদায়কে আমাদের নতুন বাংলাদেশের সাথে নতুনভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানাই।”
“এ সফরে প্রধান উপদেষ্টার ব্যাপক কর্মতৎপরতা বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিশ্বের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং অংশীদারিত্ব এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে”, বলেন শফিকুল আলম।
Leave a Reply