‘বইপড়া’ সব বয়সী মানুষেরই শ্রেষ্ঠ অভ্যাস। আর এই অভ্যাস যদি গড়ে তোলা যায় শিশু-কিশোরদের মধ্যে, তাহলে তা সর্বশ্রেষ্ঠ। বইপড়ার অভ্যাস একবার গড়ে তুলতে পারলে তা শিশু-কিশোরদের ভবিষ্যৎ জীবনের উপর অনেক বড় প্রভাব ফেলে।
বই পড়ার ফলে শিশুদের মধ্যে বেশকিছু পরিবর্তন গড়ে ওঠে। চলুন দেখা যাক কি কি ধরণের ভালোদিক বই পড়ার ফলে শিশুর মধ্যে আসেঃ
১। কল্পনাশক্তিঃ “কল্পনাশক্তি জ্ঞানের থেকেও বেশি শক্তিশালী” – আইনস্টাইন। বইয়ের প্রতিটি লাইন শিশুকে ভাবতে শেখায়, কল্পনা করতে শেখায়। এই কল্পনা কোনো ভিডিও বা ভিজুয়াল থেকে পাওয়া সম্ভব না। প্রতিটি দৃশ্য শিশু-কিশোররা কল্পনা করার যে সুযোগ পায়, তাতে তাদের মনোজগতে বড় ধরণের পরিবর্তন আনে।
২। সৃজনশীলতাঃ শিশু-কিশোর বইপড়ার সময়ে তাদের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধারণা হয়, বিভিন্ন জিনিস সম্পর্কে ভাবতে হয়, এর ফলে তাদের মধ্যে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়। নির্দিষ্ট গন্ডির বাইরে চিন্তা করার শক্তি এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা লাভ করে।
৩। ভাষার দক্ষতাঃ বইপড়ার মাধ্যমে শিশুরা নতুন নতুন শব্দ, বাচনভঙ্গির সাথে পরিচিত হওয়ায় তাদের শব্দভান্ডার বৃদ্ধি পায়। এতে তাদের ভাষাগত দক্ষতা বাড়ে। ইংরেজি, বাংলা উভয় ক্ষেত্রেই তাদের এই উন্নতি ঘটে।
৪। মনোযোগ ও ফোকাসঃ বই পড়তে এবং বুঝতে শিশু-কিশোরদের মনোযোগ দিতে হয়। এতে তাদের মধ্যে মনোযোগ শক্তি বৃদ্ধি পায় যা তার পরবর্তী জীবনে অনেক বড় ভূমিকা রাখে।
৫। ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্সঃ বই পড়ার মাধ্যমে অনেক চরিত্র এবং তাদের ইমোশন এর ব্যাপারে বিভিন্নভাবে জানা যায়, যা অন্যদের ইমোশন বুঝতে শিশু-কিশোরদের সাহায্য করে। এতে সামাজিকতা এবং মানুষের প্রতি সহমর্মিতা জন্মায়।
৬। শেখার আগ্রহঃ যেসব শিশুরা বই পড়ে, তাদের মধ্যে শেখার আগ্রহ, জানার আগ্রহ বহুগুণে বেশি থাকে। যা ভবিষ্যৎ জীবনে তাদের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে আসে।
৭। একাডেমিক সাফল্যঃ বই পড়ুয়া শিশু-কিশোররা সাধারণত পড়তে ভালবাসার কারনে, তাদের একাডেমিক শিক্ষাজীবনেও বড় সাফল্য পায়। তাদের ম্যাচুরিটি লেভেল অন্য বাচ্চাদের থেকে বেশি থাকার কারনে তাদের পক্ষে জটিল বিষয়গুলো সহজেই ধরা সম্ভব হয়।
৮। স্বাধীনভাবে চিন্তাঃ শিশুরা সাধারণত অন্যদের উপর নির্ভরশীল থাকে সকল কাজে। বইপড়া অভ্যাস তাদের মধ্যে ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলে, এতে তারা স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারে, সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
৯। বিনোদনঃ বর্তমানে হাজারো রকম ক্ষতিকর বিনোদন মাধ্যম শিশুদের হাতের কাছে আছে, সেই তুলনায় বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে তা ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো থেকে দূরে রাখে।
১০। বাস্তব জ্ঞানঃ শিশু-কিশোর বইয়ের সাথে থাকলে তারা বাস্তবতার সাথে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে। অনেক ধরণের জীবন যাপনের কথা বইয়ে জানতে পারে, ফলে মানসিকভাবে তারা বাস্তব জ্ঞানসম্মত হয়।
Leave a Reply