নিউজ ডেস্ক, ঢাকা: রংপুরের মিঠাপুকুর থানার এক কর্মকর্তাকে অন্যায়ভাবে সাজানো মামলা নেওয়ার অভিযোগে মোবাইল ফোনে শাসিয়েছেন জামায়াত নেতা পরিচয়ে শেখ রেজওয়ান নামে এক ব্যক্তি। সম্প্রতি ৫ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তাকে একপর্যায়ে বলতে শোনা যায়, ‘এই সরকারের আমলে কোনও সাজানো মামলা হলে ওসি-এসআই সবগুলাকে খায়া ফেলবো বলে দিলাম।’
এ ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপপরিদর্শক (এসআই) মিন্টু চন্দ্র এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ওই জামায়াত নেতা বলেন, ‘মাথা গরম ছিল তাই কিছু কটু কথা বলে ফেলেছি।’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ অক্টোবর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পূর্ব মুরাদপুর নয়াপাড়া গ্রামের রেজাউল ইসলাম তার বাসায় হামলা চালিয়ে মালামাল ভাঙচুর পিটিয়ে আহত করে দিনদুপুরে তার বাড়ি থেকে গরু নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় মামলাটি তদন্ত করার দায়িত্ব পান এসআই মিন্টু চন্দ্র।
এ ঘটনার পর শেখ রেজওয়ান নিজেকে মিঠাপুকুর উপজেলার লতিফপুরের বাসিন্দা ও জামায়াত নেতা পরিচয় দিয়ে মিঠাপুকুর থানার এসআই মিন্টু চন্দ্রকে তার মোবাইল ফোনে কল করে তার অবস্থান জানতে চান। এ সময় এসআই মিন্টু ছুটিতে আছেন জানালে শেখ রেজওয়ান তাকে শাসাতে থাকেন এবং কেন মামলা নিয়েছেন সে ব্যাপারে জানতে চান। কথাবার্তার পুরো সময়জুড়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে শাসাতে থাকেন শেখ রেজওয়ান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শেখ রেজওয়ানের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে জামায়াতের সহযোগী সংগঠন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির রংপুর জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দাবি করেন। এসআই মিন্টুকে ফোন করার কথা স্বীকার করে বলেন, ওই সময় মাথা গরম থাকায় একটু উচ্চবাচ্য হয়েছে। পুরো বিষয়টি মিটমাট হয়ে গেছে।’
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এনামুল হকের বলেন, ‘শেখ রেজওয়ান নামে জামায়াতের কোনও নেতা, কর্মী বা সংগঠক মিঠাপুকুরে নেই। বিষয়টি পুলিশ কর্তৃক অবহিত হয়েছি।’ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।
মিঠাপুকুর থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ‘শেখ রেজওয়ান নামে এক ব্যক্তি জামায়াত নেতার পরিচয়ে এসআই মিন্টু চন্দ্রকে নানাভাবে শাসিয়েছেন। তাকে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে শেখ রেজওয়ান থানায় এসে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি ক্ষমা চাইলেই তো সব শেষ হয়ে যায় না।’
Leave a Reply