1. editor1@japanbanglapress.com : editor1 :
  2. japanbanglapress@japanbanglapress.com : japanbanglapress :
  3. mdzahidulislam1000@gmail.com : zahid :

মধুর ক্যান্টিনে গরু – লুৎফর রহমান রিটন

  • আপডেটের সময় : রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৪
সুদূর অতীতে মধুর ক্যান্টিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আসতেন। কিন্তু গতকাল এসেছিলো কয়েকটা গরু! এরকম একটা খবর এবং ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে সোস্যাল মিডিয়ায়। সনাতন ধর্মের অনুসারী ছিলেন মধুর ক্যান্টিনের কর্ণধার শ্রী মধুসুদন দে ওরফে মধুবাবু। ঊনসত্তর-সত্তর-একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার অন্যতম প্রধান সূতিকাগার ছিলো মধুর ক্যান্টিন। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নির্মাণকালের অন্যতম কুশীলব মধুদাকে তাই জীবন দিতে হয়েছিলো। তাঁকে হত্যা করা হয়েছিলো মুক্তিযুদ্ধের সূচনাপর্বে, ২৬ মার্চ ১৯৭১ এ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্ব এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সমস্ত ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্ধু হিশেবেই ইতিহাসে সুপরিচিত মধুদা প্রতিষ্ঠিত এই মধুর ক্যান্টিন।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং মধুদাকে অপমান অসম্মান করতেই সনাতন ধর্মের অনুসারী মধুদা প্রতিষ্ঠিত মধুর ক্যান্টিনে অকস্মাৎ এই গরুর আমদানি।
১৯৯৬ সালে মধুদাকে নিয়ে একটা ছড়া লিখেছিলাম তাঁর স্মরণে প্রকাশিত মধুদা স্মারকগন্থের জন্যে।
মধুর ক্যান্টিন এবং মধুদাকে সম্মান জানিয়ে ছড়াটা পেশ করছি আমার ফেসবুক বন্ধুদের উদ্দেশ্যে–
মধুর ক্যান্টিন
লুৎফর রহমান রিটন
ষাটের দশকে ঊনসত্তরে
উত্তাল সেই দিন
ইতিহাস বলে–মুখরিত ছিলো
মধুদার ক্যান্টিন।
বিখ্যাত নেতা কিছু পাতি নেতা
আর কর্মীর দল
ধূমায়িত কাপে ঝড় তোলে রোজ
বিশ্বাসে অবিচল।
অদূরে বসেই মধুদা হাসেন
প্রকাশ্যে, মুখ টিপে,
বাকিতে খাবার পরিবেশনের অনুরোধ আসে স্লিপে।
তুখোড় নেতাই পাঠিয়েছে স্লিপ
ফেরানো যাবে না তাকে,
মধুদা ভাবেন বাকির খাতায়
চোখ বোলানোর ফাঁকে–
আগামীতে এই ছেলেরা ধরবে
দেশের দশের হাল,
মধু রে তখন থাকবে না তোর
এরকম দিনকাল।
সব টাকা ওরা শোধ করে দেবে
ওরা তো সোনার ছেলে,
আলোর কুসুম ফোটাবেই ওরা
বুকের রক্ত ঢেলে।
কোনো ছেলে হবে বিশাল মন্ত্রী
প্রেসিডেন্ট হবে কেউ,
দিনমান তাই ওদের পেছনে
লেগে থাকে শাদা ফেউ।
কারো নামে আছে হুলিয়া, তাড়িয়ে–
বেড়াচ্ছে টিকটিকি,
ভরপেট খেয়ে দিয়ে যায় কেউ
আধুলি কিংবা সিকি।
”বাকিটা মধুদা পরে দিয়ে দেবো,
ভেবো নাকো একদম”,
মধুদা জানেন–এটা আশ্বাস
পসিবলিটিটা কম।
কার কাছে কতো বাকি রয়ে গেছে
হিশেব খাতায় লিখে–
মধু বাবু শুধু তাকিয়ে থাকেন
আগামী দিনের দিকে।
বাকির খাতার পাতায় পাতায়
সবকিছু লেখা আছে–
মধুদা পাবেন, অথচ পাননি
কতো টাকা কার কাছে।
অথচ সে টাকা শোধ হয়নি কো
হবেও না কোনোদিনই,
বাঘা বাঘা বহু নেতা ও আমলা
মধুদার কাছে ঋণী।
তিরিশ লক্ষ শহিদের দেশে
মধু বাবু একজন,
মুক্তিযুদ্ধে তাঁর তাজা খুনে
জ্বলেছিলো লন্ঠন।
বুদ্ধিজীবীরা তোমাকে ভোলেনি
মধুদা তোমাকে সেলাম,
দেখিনি তোমাকে, শ্রদ্ধাঞ্জলি–
তবু লিখে রেখে গেলাম…।
রচনাকাল ১৯৯৬
[ ছড়াটি ছাপা হয়েছিলো ‘মধুদা স্মারকগ্রন্থে’। ]

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
Japan Bangla Press © 2025. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest