নিউজ ডেস্ক, ঢাকা: একসময় চালের দাম বেড়ে গেলে বলা হত ‘বেশি করে আলু খান, ভাতের ওপর চাপ কমান’। বর্তমানে সে আলুর দামই বেশ চড়া। এরই মধ্যে এটি ছাড়িয়ে গেছে চালের দামকে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, বাজারে মোটা চালের দর কেজিতে ৫২-৫৫ টাকা, আর চিকন চাল ৬৮-৮০ টাকা।
কেরানীগঞ্জের আগানগর ও জিনজিরা এবং রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও শ্যামবাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে আলুর দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, যা গত মাসের তুলনায় ২২.৩৩ শতাংশ ও গত বছরের তুলনায় ৪২.১১ শতাংশ বেশি।
ক্রেতারা বলছেন, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে একসময় আলুই ছিল গরিবের ভরসার জায়গা। তবে সিন্ডিকেট করে আবারও আলুর বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। তবে সরকার নজরদারি বাড়ালে এ দাম কমতে পারে।
সাব্বির আহমেদ নামে এক ক্রেতা বলেন, আলুর বাজার লাগাম ছাড়িয়েছে গত বছরই। চলতি বছরের মাঝামাঝিতে দাম কিছুটা কম থাকলেও বর্তমানে ফের বাড়তে শুরু করেছে।
তাহমিদ নামে আরেক ক্রেতা বলেন,এক কেজি আলু ৭০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। মধ্যবিত্তদের জন্য এটা রীতিমতো বাড়তি চাপ। দাম কমাতে আমদানির পাশাপাশি চাই কঠোর তদারকি; না হলে দাম ১০০ টাকা ছাড়াবে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে পাইকারিতে প্রতি কেজি আলু ৫৪ থেকে ৫৫ টাকায় কেনা গেলেও এখন কিনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকায়। তাই খুচরা পর্যায়েও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তবে আড়তদারদের দাবি, বাজারে এখন আলুর কিছুটা সরবরাহসংকট চলছে, যার কারণে দাম বেড়েছে। তবে আমদানির খবরে দাম কমতেও শুরু করেছে। রাজধানীর শ্যামবাজারে মেসার্স মুর্শিদ ভাণ্ডারের মালিক হাসান আহমেদ বলেন,প্রতিবছর মৌসুমের শেষদিকে আলুর দাম বাড়ে। এছাড়া, কোল্ড স্টোরেজগুলো থেকে পর্যাপ্ত আলু দিচ্ছে না। নতুন আলু বাজারে উঠলে দাম কিছুটা কমবে। বর্তমানে বিক্রমপুরের আলু ৫৮-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, রাজশাহীতে আলু বিক্রি করা হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৩ টাকা।
কারওয়ান বাজারের বিক্রমপুর বাণিজ্যালয়ের রুবেল জানান, বাজারে আলুর সংকট চলছে। কোল্ড স্টোরেজগুলো থেকে পর্যাপ্ত আলু পাওয়া যাচ্ছে না। এতে দাম কিছুটা বেড়েছিল। তবে ভারত থেকে আলু আমদানি চলমান থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে আড়ত ও পাইকারিতে ৫৮-৬৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার কোল্ড স্টোরেজগুলোতে অভিযান চালালে দাম আরও কমতো।
এদিকে, মুন্সিগঞ্জের কোল্ড স্টোরেজগুলো জানায়, হিমাগারে এখনো প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন আলু মজুত আছে। হিমাগার গেটে বর্তমানে প্রতি কেজি আলুর দাম ৫০ টাকা; আর খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা। চাহিদা থাকায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে একদিনে ৭১টি ট্রাকে আমদানি হয়েছে ১৮ হাজার ২০০ মেট্রিক টন আলু।
Leave a Reply