1. editor1@japanbanglapress.com : editor1 :
  2. japanbanglapress@japanbanglapress.com : japanbanglapress :
  3. mdzahidulislam1000@gmail.com : zahid :
সাম্প্রতিক :
আজ বিকালে মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২৩ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো মালয়েশিয়া মব জাস্টিসের নামে মগের মুল্লুক কায়েমের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন-সাইফুর রহমান কায়েস শেখ হাসিনার সরকার হটাতে মার্কিন নীলনকশার গোপন নথি ফাঁস শেখ হাসিনার সরকার হটাতে মার্কিন নীলনকশা ‘কোনো দলের পক্ষে বা বিপক্ষে থাকতে চাই না’ “মানুষ ও সময়: শক্তি, সংগ্রাম এবং সহজতার দ্বন্দ্ব”-মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বিশ্বাস। চার দফা দাবিতে শাহবাগে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের অবস্থান বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের সূতিকাগার ধানমন্ডি-৩২ ধ্বংসের নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যের আহবান স্টামফোর্ডের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ফারাহনাজ ফিরোজ

যে বিজয় আমি দেখেছিলাম অতঃপর-ড.অধীর সরকার

  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

১৯৭১ সনের ১৬ ডিসেম্বরে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ভারতীয় উপহাদেশের তিন তিনটি মহাযুদ্ধের ভয়াবহ পরিণামের এক অবিমিশ্র ধারাবাহিকতা বহন করে।যে তিনটি মহাযুদ্ধে বাঙালির দেনা-পাওনার হিসেবটা খুব জটিল।প্রায় ছ হাজার বছরের পূর্বে সংগঠিত কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ,১৭৫৭ সনের পলাশীর যুদ্ধ আর ১৯৭১ সনের বাঙালির স্বোপার্জিত মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ।

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে পক্ষ ছিল দুটি।একদিকে ন্যায় ও সত্যের প্রতিক পাণ্ডবগণ ;অন্যদিকে অন্যায়, পাপাচার আর দুঃশাসনের প্রতিক কৌরবগণ। এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ভারতবর্ষের রাজারা দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন
। কোন কোন রাজা পাণ্ডবপক্ষ আবার কোন কোন রাজা কৌরবদের পক্ষ অবলম্বন করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এই যুদ্ধ আমাদের প্রাগজ্যোতিষের রাজা ভগদত্ত পাপাচারী কৌরবদের পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন।অর্থাৎ আমাদের রাজা ভগদত্ত আমাদেরকে অন্যায়কারীর পক্ষে অস্ত্র ধারণ করতে বাধ্য করেছিলেন।এই অন্যায়ের পক্ষাবলম্বনকারীর লিগ্যাসিই আমাদের রক্তধারায় প্রবাহিত।যেটা আর যাই করুক আমাদের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করে না।

এরপর ধরা যাক পলাশীর যুদ্ধ।আমাদের নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হয়ে বন্দি হয়ে রাজধানীতে ফিরেছিলেন।রাজধানীতে ফেরার পথে মুর্শিদাবাদের পথে পথে তাঁকে এই বাঙালি যেভাবে অসম্মান ও অপদস্ত করেছিল,সে নির্মম ইতিহাসও আমাদের কারোর অজানা নয়।তারপর প্রায় দুশো বছরের গোলামীর শাসন।মির্জাফর,ঘসেটী বেগমের উত্তরসুরীরা আমাদের সমাজ জীবন থেকে নিঃশেষ হয়ে যায় নি। এ ধারার লিগ্যাসীরও উত্তরাধিকার আমরাই।

ভারত স্বাধীন হল।পূর্ব বাংলা হল পূর্ব পাকিস্তান।পূর্ব বাংলার বাঙালি কি পেল? ধর্মের নামে পাকিস্তান কি দিল? পশ্চিম পাকিস্তানের মুসলিম ভাইয়েরা কি দিল পূর্বপাকিস্তানের বাঙালি মুসলিম ভাইদেরকে?কেড়ে নিল মাতৃভাষার অধিকার,এমন কি আঘাত করলো পূর্ব পাকিস্তানের ঈমানদার মুসলমান ভাইদের ঈমান আকিদায়।নাক সিটকিয়ে বললো বাঙালি মুসলমান নাকি উঁচুমানের মুসলমান হতে পারে না।সাচ্চা মুসলমান নাহি বাঙাল!ওরা সাচ্চা মুসলমান বনে গিয়ে
চাকরী-বাকরী,সামাজিক-সামরিক-আর্থনৈতিক সমস্ত ক্ষেত্রে বৈষম্য সৃষ্টি করে বাঙালির নাভিশ্বাস তুলে ফেললো। বাঙালি বুঝতে পারলো পূর্ণ স্বাধীনতা ছাড়া তাঁদের মুক্তি নাই।
১৯৫২ সনের ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত পথ ধরে বাঙালি এগিয়ে চললো।১৯৫৬,১৯৬২,১৯৬৬র রক্তাক্ত পথে বাঙালি ১৯৬৯ এ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতন ঘটাল আইয়ুবশাহীর। এলো ৭০ এর নির্বাচন।ভূমিধ্বস বিজয়ে বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্ব সমগ্র পাকিস্তান শাসনের ম্যান্ডেট লাভ করলো।পাকিস্তানী সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া বুটের তলায় পিষে মারতে চাইলো বাঙালির অধিকারকে।বাঙালি স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের পথ বেছে নিল। পাকিস্তানী সামরিক জান্তা পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করলো।২৫ মার্চ কালরাত্রিতে ঘুমন্ত বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল ইয়াহিয়ার রক্তপিশাচ সেনাবাহিনী। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন।গ্রেফতার বরণ করতে বাধ্য হলেন।শুরু হলো রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধ।শত মায়ের করুণ অশ্রু,তিরিশ লক্ষ শহীদের আত্মদান,দুইলক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এলো স্বোপার্জিত স্বাধীনতা।এলো বিজয়ের চূড়ান্ত দিন ১৬ ডিসেম্বর।এর আগে ৮ ডিসেম্বর আমার জন্মস্থান ঘাটাইল ও ১০ ডিসেম্বর আমার মহাকুমা বর্তমানে জেলা শহর টাঙ্গাইল পাক হানাদার মুক্ত হয়ে গেছে।
আমি তখন শৈশবের কোল ছেড়ে কৈশোরের ঊষালগ্নে স্বাধীনতার প্রথম সূর্য পূর্বদিগন্তে উদিত হতে দেখছি মাত্র।মনে পড়ছে যুদ্ধকালীন নয় মাসের করুণ দুর্দশার নানা নিদারুণ করুণ চিত্র।এদেশেরই কিছু নিকৃষ্ট সন্তান যারা রাজাকারবাহিনীর সদস্য হযেছিল;তাদের দ্বারা সহপাঠী সতীর্থ বন্ধুর মায়ের সম্ভ্রম হারানোর তীব্র চিৎকারের গ্লানি,বংশীয় কুল পুরোহিত শশধর চক্রবর্তীর হত্যাকাণ্ড, ভাগ্নে নকুলের মৃত্যু,প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনদের হত্যাকাণ্ডের বীভৎস্য বিবরণ শোনে আমরা তখন আতকে উঠেছি।কত শত অজানা নিরপরাধ পথচারীকে যে ওরা পাখির মত গুলি করে মেরেছে তার ইয়াত্বা নেই।

তবুও স্বাধীনতা এসেছে।৯৩ হাজার পাক হানাদার বাহিনীর সদস্য রেসকোর্সের ময়দানে আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়েছে। সেই বিজয় খুব কাছ থেকে দেখেছি আমি।১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের আনন্দে আমাদের কদমতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প থেকে শূন্যে মুহূর্মুহূ গুলি ছোঁড়ে উল্লাস করতে থাকেন দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা সূর্যসন্তানেরা আর তার সঙ্গে নানা বাদ্যযন্ত্র সহকারে যোগ দেয় স্বাধীনতা ও শান্তিকামী আপামর জনসাধারণ।ব্যতিক্রম চিত্রও ধরা পড়তে থাকে।এই নয় মাস যারা পাকহানদের দোসর হয়ে লুটপাট,অগ্নিসংযোগ,ধর্ষণকর্মের সহযোগী হয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল, নানা মানবতাবিরোধী অপকর্মে লিপ্ত ছিল;তাদের কেউ কেউ বোরকা পড়ে,কেউ বা আবা চুলদাঁড়ি কামিয়ে নাড়ুসেজে পালাতে থাকে।কেউ কেউ মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে জেলে যায়।কেউ কেউ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গা ঢাকা দিয়ে লুকিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে।তার পরের ইতিহাস আরো নির্মম আরো নির্মম মর্ম -বেদনার।
আসে ১৯৭৫ সনের ১৫ আগস্ট।
এখন যদি হিসেব নিয়ে বসি।তাহলে কী পেল বাঙালি?
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অন্যায় পক্ষ অবলম্বন, মির্জাফর, ঘসেটী বেগমের ষড়যন্ত্র থেকে ১৯৭৫ সনের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কী কোনই মিলেই খুঁজে পাওয়া যাবে না?তারই পরম্পরা কি আজো বহমান নয়? আজ ২০২৪ জয় বাংলা বলা যায় কী?

আমি বিজয় দেখেছি,কিন্তু বিজয়ের গৌরব আমাকে পরিস্নাত করতে পারে নি। চেয়ে আছি আগামীর দিকে
হে বিজয়! তুমি সত্যিকারে আস।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো খবর
Japan Bangla Press © 2025. All Rights Reserved.
Built with care by Pixel Suggest