নিউজ ডেস্ক, ঢাকা: কম ভ্যাটের অন্তত ৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫% আরোপের পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। জানা গেছে হোটেল ও রেস্তোরাঁ ওপর ভ্যাটের হার বাড়ানোরও পরিকল্পনা করছে এনবিআর।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাজধানী ঢাকার সোনারগাঁও হোটেল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান সংগঠনটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, ভ্যাট আগের মতো ৫% না রাখা হলে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা প্রথমে মানববন্ধন করবেন। তাতে কাজ না হলে সারাদেশে এক দিনের জন্য রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখা হবে। এরপরও কাজ না হলে চূড়ান্ত পর্যায়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।
তিনি বলেন, “রেস্তোরাঁ ব্যবসার ওপর ভ্যাট ৫% থেকে বাড়িয়ে ১৫% করা হচ্ছে। এছাড়া সম্পূরক শুল্ক (এসডি) নামে আরও একটি ১০% কর আগে থেকেই আছে। অর্থাৎ ভ্যাট ১৫% ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ১০% যোগ করা হলে ভোক্তাদের মোট ২৫% কর দিতে হবে। গুলশান ও বনানীর মানুষেরা এই ভ্যাট দিতে পারেন, কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে এটা দেওয়া সম্ভব নয়, বিষয়টি অবাস্তব। পৃথিবীর কোথাও খাবারে এত ভ্যাট নেই।”
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মালিক সমিতি মনে করছে-গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে দেশে যেখানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে, সেখানে ভোক্তার কাছ থেকে কোনোভাবেই ২৫% কর আদায় করা সম্ভব নয়। চাইলেই খাবারের দাম বাড়ানো যায় না। অথচ গত সরকারের আমলে পরিষেবার ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে; সেই সঙ্গে বেড়েছে শ্রমিকদের মজুরি। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জের তো আছেই। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে এমনিতেই রেস্তোরাঁ ব্যবসা ৩০ থেকে ৪০% কমে গেছে। এ অবস্থায় ভ্যাট বাড়লে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
ইমরান হাসান অভিযোগ করে বলেন, “আগের সরকারের মতো এই সরকারও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ভোক্তাদের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। আগেও বড় ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়া হতো, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করা হতো না; এখনো তার ধারাবাহিকতা বজায় আছে।”
লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইমরান হাসান সরকারের নীতির সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, “আইএমএফের পরামর্শে পৃথিবীর কোথাও দারিদ্র্য বিমোচন হয়নি।”
রাজনৈতিক দলের চেয়ে আমলাতন্ত্র বেশি শক্তিশালী হয়ে গেছে। আগের সরকারের আমলেও এমন অনেক অজনপ্রিয় কাজ করেছে, এখনো করছে বলেও অভিযোগ করেন ইমরান হাসান।
তিনি জানান, বর্তমানে দেশে ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫ লাখ ২৫ হাজার, যদিও নিয়মিত ভ্যাট দিচ্ছে সাড়ে তিন লাখ। ভ্যাটের হার না বাড়িয়ে সবাইকে ভ্যাটের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান তিনি।
Leave a Reply