নিউজ ডেস্ক, ঢাকা: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ৩৬শে জুলাই হলের (পূর্বনাম: শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল) ছাত্রীরা হলের পূর্ব নাম বহাল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে, ‘প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছে’। তবে বিষয়টি পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছেন বাকৃবির সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসাইন।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে ৩৬ শে জুলাই হলের শিক্ষার্থীরা তাদের হলের পুরোনো নাম ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ করে। জানা যায়, বাকৃবির সর্বশেষ সিন্ডিকেটে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে জুলাই ৩৬ রাখা হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এটি মেনে নেননি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বাগবিতণ্ডা হলেও সমাধান না হওয়ায় হল থেকে বের হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে উপস্থিত হয়ে ¯ে¬াগান দিতে থাকে।
শিক্ষার্থীরা তাদের লিখিত অভিযোগে বলেন, “প্রভোস্ট ম্যাম অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করতে পারেন নাই, প্রক্টরিয়াল বডি এবং ছাত্র-বিষয়ক উপদেষ্টা হলে এসেই ফ্যাসিবাদের দোসর ট্যাগ দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা আবাসিক শিক্ষার্থী কারা? এমন উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, আবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে আইডি এবং ফ্যাকাল্টি জানতে চায় এবং হুমকি দিয়েছেন ভাইভা বোর্ডে ফেইল করিয়ে দেয়ার, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসাইন স্যার “বঙ্গমাতার সাথে এত পিরিত কেন পিরিত কেন?” এমন বক্তব্য দিয়েছেন, হলের নাম মেনে না নেওয়ায়। সহকারী প্রক্টর আনিসুর রহমান মজুমদার (টিটু) স্যার ব্যক্তিগত অ্যাটাক করেন। একজন শিক্ষার্থীর সাথে বাজে ব্যবহার করেছেন এবং “তুমি ছাত্রলীগ” এমন অপবাদ দিয়েছেন”।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ‘নতুন প্রবর্তিত নাম “জুলাই ৩৬” চাই না, পূর্বের নাম “বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল” বহাল চাই, সিন্ডিকেটের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা হোক এবং সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত পূর্বের নাম বহাল থাকবে’।
এ বিষয়ে বাকৃবির সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসাইন বলেন, ‘ছাত্রীদের আমরা বলি, যেহেতু এটা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত তাই আমাদের কিছু করার নেই, তোমাদের কোনো অভিযোগ থাকলে তোমরা লিখিত দাও। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা আমাদের গালিগালাজ করে এবং বলে, সিন্ডিকেটকে এখানে ডাকেন, হলের আগের নামটি আমাদের আবেগ। আপনারা কি করবেন, আমাদের ফেইল করিয়ে দিবেন, দেন?’
সহকারী প্রক্টর আরো বলেন, ‘আমরা অনেক চেষ্টা করেছি শিক্ষার্থীদের বুঝাতে, তবে তারা উল্টো আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে’।
বাকৃবির ৩৬ শে জুলাই হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. তাহসিন ফারজানা বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের অনেক বুঝাতে চেষ্টা করেছি যে বিষয়টি সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত। তবে তারা কিছু বুঝতেই রাজি হয়নি। তখন আমি সেখান থেকে চলে যাই, তবে আমি সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ খবর নিয়েছি।
উলে¬খ্য, গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৩২৭তম অধিবেশনে গৃহীত ৭নং সিদ্ধান্তমূলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান/নির্মাণাধীন হলসমূহ, নতুন ভবন এবং স্থানের নাম পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তিত নামসমূহ হলো- বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হলের পরিবর্তিত নাম জুলাই ৩৬ হল, রোজী জামাল হল থেকে কৃষিকন্যা হল, নির্মাণাধীন নতুন ছাত্রী হল (অথবা অন্য যে নামেই থাকুক না কেন) থেকে বেগম খালেদা জিয়া হল, পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া পিএইচডি ডরমেটরির পরিবর্তিত নাম শহীদ সাদ ইবনে মমতাজ পিএইচডি ডরমেটরি, নতুন অতিথি ভবন/গেস্ট হাউজ থেকে কৃষিবিদ গেস্ট হাউজ এবং বঙ্গবন্ধু চত্বরের পরিবর্তিত নাম সমাবর্তন চত্বর।
Leave a Reply