দেশ অন্ধকারের দিকেই যাচ্ছে। মব জাস্টিস’র নামে মগের মুল্লুক কায়েমের মিশন চলছে। আমরা জানি না দেশের মননশীল চর্চা কোন পথে যাবে?
নারীদের আর শিকল পরাতে হচ্ছে না। তারা নিজেরাই এর চক্রব্যূহে পড়ে গেছে।
বড় রাজনৈতিক দলগুলিকেই এর দায় নিতে হবে। আওয়ামীলীগ তাদের তোষণ করে বিগত ষোল বছর দেশ শাসন করেছে। আর বিএনপি জামায়াতকে তাদের রাজনৈতিক জোটের অন্যতম শরীক করে ক্ষমতায়িত করেছে। এখন জামায়াতই বিএনপিকে কোণ্ঠাসা করে ফেলেছে। মীর্জা ফখরুল, তারেক রহমানেরা বুঝতেই পারে নি তোমারে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে। বিএনপির ঘাড়ে সওয়ার হয়ে জামায়াত দেশব্যাপী তাদের ভিত্তিভূমি প্রস্তুত করে এখন বিএনপিকেই থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার বানিয়ে ফেলেছে। রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারা এখন পাল্টে গেছে। মুক্তমনে আর কথা বলতে, এমনকি শ্বাস নিতেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জনসাধারণ।
জনাব ইউনুস সরকার প্রধান হিসেবে একটি কঙ্কাল বৈ আর কিছুই নয় জামায়াত হচ্ছে তার সরকারের প্রাণ।
মব জাস্টিসের নামে এবারের মহান একুশের বইমেলায় মগের মুল্লুক কায়েমের মিশন চলবে, লেখক-প্রকাশকদের হেনস্তা করতে পারে বলে এক প্রকাশক বন্ধু জানিয়েছেন। তাই এবারের বইমেলায় না যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বই পুলিশ পড়ে দেখবে ভালো কথা। কিন্তু সেন্সর আরোপ কাম্য নয়- অত্যাবশ্যকীয়ভাবে অবাঞ্চিত পদক্ষেপ। তাহলে কি এখন যে শিশু মায়ের গর্ভে আসবে তাকেও পুলিশ পরখ করে দেখবে তার ভ্রুণ গর্ভাশয়ে প্রবেশের সময় তার মা বাবা আল্লখোদার নাম নিয়েছিলো কিনা? এটা এখন মগের মুল্লুক।
আমরা ইউরোপ, আমেরিকায় যাবো না। এদেশেই মরতে চাই। কিন্তু নিরাপদ মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই।বিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শ লালনের জন্য কাউকে হেনস্তা করা বন্ধ হোক।
২. মেটিকুলাসলি যে ধ্বংসাত্মক কার্কলাপের বাস্তবায়ন দেখছি সেটি এক অশুভ শক্তির আস্ফালন ছাড়া আর কি হতে পারে? ধানমন্ডি বত্রিশ থেকে শুরু করে দেশের নানাস্থানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙ্গে ফেলা, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর, আগুনে ভস্মীভূত করা প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতির বহি:প্রকাশ ছাড়া আর কি হতে পারে?
৩. ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা জামায়াতে ইসলামী বলছে আওয়ামী লীগকে ক্ষমা চাইতে হবে। জামায়াতে ইসলামী কি মহান একাত্তরে তাদের কৃতকর্মের জন্য জাতির কাছে আজো ক্ষমা চেয়েছে? তাহলে তারা কি চাইছে? তারা কিসের ভিত্তিতে আওয়ামীলীগকে ক্ষমা চাইতে বলছে? আমরা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের একসময়ের অন্যায় আচরণের কথা ভুলে যাই নি। তারা একসময়ের গণনিপীড়নের জন্য গো হারা হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে গণ আন্দোলনের মাধ্যমে। তাহলে কি এখন আওয়ামীলীগবিহীন রাজনীতির মাঠে জামাত-বিএনপি নিজেদেরকে ওয়ানম্যান আর্মি মনে করছে? যদি মনে করে থাকে সেটা হবে তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার দারুণ অভাব এবং সংকট। আওয়ামীলীগ এখন বিশ্রাম নিয়ে শক্তি সঞ্চয় করছে বলে বিভিন্ন ভিডিও বার্তায় দেখা যাচ্ছে। আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় থাকতে জামাত শিবিরের লোকজন দলটির পদ পদবী কিনে নিয়েছিলো। টাকার কাছে আওয়ামিলীগ বিক্রি হয়ে গিয়েছিলো। তাই তারা তাদের পতন ঠেকাতে পারে নি- যেটি একমাত্র কারণ নয়, তবে অনেকগুলি কারণের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য কারণ বলে স্বীকার করবেন অভিজ্ঞজনেরা। অদূর ভবিষ্যতে আওয়ামীলীগ তাদের নেতাকর্মীদেরকে দিয়ে জামাত বিএনপির পদ পদবী কেনাবে। কিনে অনুপ্রবেশ ঘটাবে। দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির চরম দুর্দিন চলছে। দেশ কোন দিকে যাচ্ছে বা দিকচিহ্নহীন হয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্র। মুক্তিযুদ্ধ , স্বাধীনতা বলতে আর কি থাকলো? সমাজকে আলখাল্লা পরিয়ে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন এরা। আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমরা দেশকে ভালোবসি। সময়ের প্রয়োজনে ঘুরে দাড়াতে জানি। তাই আমরা বোকা বা অথর্ব নই।
Leave a Reply