নিউজ ডেস্ক, ঢাকা: একুশের প্রভাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা অনেকেই যে ভিড় জমাতেন বইমেলায়; সেই চিত্র এবার পাল্টেছে, সকাল থেকে মেলা প্রায় ‘জনশূন্য’।
এদিন সকাল ৭টায় মেলার দুয়ার খুলে দেওয়া হলেও ৯টা পর্যন্ত একদমই দেখা মেলেনি দর্শনার্থীর। কোনো কোনো প্রকাশনীর স্টলও দেখা যায় বন্ধ থাকতে।
ঝুমঝুমি প্রকাশনীর বিক্রয় ব্যবস্থাপক রিফা তামান্না ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৭টা ২০ মিনিটে আমি স্টলে এসেছি, কোনো লোকজন নেই। একদম ফাঁকা। বইমেলায় আসার আগে শহীদ মিনারে গিয়েছিলাম। সেখানেও এবার লোকজন কম মনে হয়েছে।”
তবে ৯টার পর থেকে বইমেলায় কিছু লোক আসা শুরু করেছে জানিয়ে রিফা তামান্না বলেন, “৯টার পর থেকে কিছু লোক আসছে, তবে সংখ্যাটা হাতেগোনা।”
সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ঝুমঝুমি প্রকাশনীর স্টলটিতে দুটি বই বিক্রি হয়েছে বলে জানান তিনি।
এবারই মেলায় প্রথম স্টল বরাদ্দ নিয়েছে শিশুতোষ বইয়ের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘দোলন’। প্রকাশনীটির স্বত্ত্বাধিকারী কামাল মুস্তাফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এত জনশূন্য হবে একুশের সকাল, তা ধারণায় ছিল না। ভেবেছিলাম শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে অনেকে বইমেলায় আসবে; কিন্তু তা হয়নি।
“আমি ৮টার দিকে এসেছি, সকাল থেকে ফাঁকা মেলায় বসে আছি।”
একুশের সকালে মেলায় দোলনের স্টলে কোনো বই বিক্রি হয়নি বলেও জানান কামাল মুস্তাফা। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে ভিড় বাড়বে বলে আশা করছেন এই তরুণ প্রকাশক।
কামাল মুস্তাফা বলেন, “দুপুরের পর থেকে আশা করছি মেলায় ভিড় বাড়বে, বইপ্রেমীরা আসবে।”
বইমেলার জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, একুশে ফেব্রুয়ারির দিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে।
পয়লা ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া মাসব্যাপি এবারের মেলায় বিক্রি সন্তোষজনক নয় বলে জানান বাংলানামা প্রকাশনীর প্রকাশক হোসেন শহীদ মজনু।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অন্যান্য বছর সাধারণত পয়লা ফাল্গুন থেকে বিক্রি বাড়তে থাকে। মেলার প্রথম সপ্তাহে একটু কম বিক্রি হয়। বসন্ত উৎসব আর একুশে ফেব্রুয়ারি থাকে প্রকাশকদের কাঙ্ক্ষিত দিন। এছাড়া শুক্র-শনিবারও লোক সমাগম হয়। বিক্রিও ভালো হয়।
“এবার বসন্ত এবং একুশে ফেব্রুয়ারি শুক্রবার হচ্ছে। ফলে শুক্রবারের ছুটির যে আলাদা আমেজ, তা মিলছে না। আর মেলার ২০ দিনে বিক্রি খুব একটা ভালো নয়।”
এবারের বইমেলায় ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ১ হাজার ৮৪ ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গতবছর প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৪২টি, আর ইউনিট ছিল ৯৪৬টি।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৬০৯টি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবার মোট প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি, যার মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকছে ৩৬টি। গত বছরও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি ছিল।
লিটল ম্যাগাজিন চত্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায় করা হয়েছে। সেখানে ১৩০টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া শিশু চত্বরে ৭৪টি প্রতিষ্ঠানকে ১২০ ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছর শিশু চত্বরে ৬৮টি প্রতিষ্ঠানকে ১০৯ ইউনিট দেওয়া হয়েছিল।
Leave a Reply